• শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন

২০৫০ সাল নাগাদ অর্ধেক মানুষ স্থূল হয়ে যেতে পারে

রিপোর্টারের নাম / ০ টাইম ভিউ
আপডেট সময়: শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন

আগামী ২৫ বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অর্ধেকের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক, এক-তৃতীয়াংশ শিশু ও তরুণ-তরুণী স্থূল বা মুটিয়ে যেতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, এই স্থূলতার কারণে অকাল মৃত্যু, রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বাড়িয়ে দেওয়াসহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য বিরাট হুমকি তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ২০৫০ সাল নাগাদ প্রায় ৬০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ও ৩১ শতাংশ শিশু ও তরুণ-তরুণী মুটিয়ে যেতে পারে এবং এর কারণে নানা সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত তিন দশকে বিশ্বব্যাপী স্থূলতাজনিত সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থতার কারণে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে বলে বিশ্লেষণে বলা হয়েছে।

বর্তমানে ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সি ২১১ কোটি এবং ৫-২৪ বছর বয়সি ৪৯ কোটি ৩০ লাখ শিশু ও তরুণ-তরুণী ওজন বেশি বা স্থূলতায় ভুগছেন। এই সংখ্যা ১৯৯০ সালে ছিল যথাক্রমে ৭৩ কোটি এক লাখ ও ১৯ কোটি ৮০ লাখ।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও এই গবেষণার প্রধান লেখক এমানুয়েলা গাকিদু বলেন, বিশ্বে স্থূলতা যেভাবে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে, তা অবশ্যই অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি একে সমাজের ব্যর্থতা বলে অভিহিত করেন।

গবেষণা মতে, কেবল উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকাতেই ২০৫০ সাল নাগাদ এক তৃতীরয়াংশ শিশু ও তরুণ-তরুণী (প্রায় ১৩০ বিলিয়ন) স্থূলতায় ভুগবেন। যা দেশগুলোর সমাজ, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে শিশুরা আগের প্রজন্মের তুলনায় দ্রুত হারে ওজন বৃদ্ধি করছে এবং স্থূলতা অল্প বয়সেই দেখা দিচ্ছে বলে জানান গবেষকরা। তারা বলেন, এতে তরুণ বয়সেই টাইপ ২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন তারা।

উদাহরণস্বরূপ, উচ্চ-আয়ের দেশগুলিতে ১৯৬০-এর দশকে জন্মানো পুরুষদের মধ্যে যেখানে মাত্র ৭ শতাংশ ২৫ বছর বয়সে স্থূলতায় আক্রান্ত ছিলেন, সেখানে ১৯৯০-এর দশকে জন্মানোদের মধ্যে এই হার বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ শতাংশ। ২০১৫ সালে জন্মানো পুরুষদের মধ্যে এটি ২৫ শতাংশে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন গবেষকরা।

স্থানীয় সময় সোমবার (৩ মার্চ) ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় দরিদ্র দেশগুলোকে স্থূলতার প্রভাব নিয়ে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

গবেষকরা বলেন, উচ্চ বিএমআইয়ের (স্থূলতা) কারণে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে অধিক সংখ্যক অকাল মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ওই দেশগুলোতে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার অভাব থাকার কারণেই এমনটা ঘটেছে বলে মত দেন তারা।

ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফোরামের প্রধান নির্বাহী জোহানা রালস্টন বলেন, ‘স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও সমাজের ওপর স্থূলতার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।’ সীমিত সম্পদের দেশগুলোর জন্য এই প্রভাব মোকাবিলা করা আরও চ্যালেঞ্জিং হবে বলে অভিমত দেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *